স্বদেশ ডেস্ক: এলইডি আলোর ঝলকানি, ঢাকের শব্দে মুখরিত দুর্গাপুজো প্যান্ডেলে সাজানো রয়েছে বেশ কিছু খাঁচাভরতি স্ন্দুর পাখি। পরিবেশবিদদের দাবি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এর মধ্যে মারা গিয়েছে কয়েকটি পাখি। তাঁদের দাবি উড়িয়ে দিয়ে মন্ডপে পাখি প্রদর্শনী বহাল রাখায় অনড় পুজো কমিটি।
অসমের শিলচরের উধারবন্দে কালীবাড়ি দুর্গাপুজো কমিটির প্যান্ডেলে ৩শ’ পাখিকে খাঁচায় রাখা হয়েছে। অক্ষরধাম মন্দিরের আদলে গড়া মন্ডপ ও লন্ডন ব্রিজের মডেল ছাড়াও পাখি দেখিয়ে দর্শক টানার পরিকল্পনা করা হয়েছে এই পুজোয়। কিন্তু উদ্বোধনের পরেই তা নিয়ে আপত্তি জানাতে শুরু করেন পরিবেশবিদরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্ডপে খাঁচাবন্দি পাখির ছবি দেখে কাছাড় ডেপুটি কমিশনার লয়া মাদ্দুরির কাছে ওয়েব দুনিয়ার বাসিন্দারা বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে বন্দি পাখিদের অবিলম্বে মুক্দি দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।
মন্ডপ চত্বর থেকে পাখিগুলিকে সরিয়ে নিয়ে যেতে পুজো কমিটিকে বলেন ডেপুটি কমিশনার। তিনি জানিয়েছেন, ‘যদিও পুজো কমিটির সদস্যরা ছাড়পত্র জোগাড় করেছেন এবং ওই প্রজাতির পাখি পোষ্য হিসেবে রাখা যায়, তবুও এত জোরালো আলো ও শব্দের মাঝে পাখিগুলি রাখার কারণে ওঁদের বলেছি মন্ডপ থেকে খাঁচাগুলি সরিয়ে দিতে।’
ডেপুটি কমিশনেরর নির্দেশ অবশ্য মানতে নারাজ পুজো কমিটি। সরকারি ছাড়পত্র তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে স্থানীয় বিজেপি বিধায়কও তাঁদের সমর্থন জানিয়েছেন। এদিন সন্ধ্যায় ওই পুজো উদ্বোধন করেন বিধায়ক মিহির কান্তি সোম। পাখি বিতর্কে তাঁর যুক্তি, ‘পাখিগুলি বিদেশি। তাদের কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় জন্ম দেওয়া হয়েছে এবং মানুষের শখ মেটানোই তাদের কাজ। বিশ্বের অসংখ্য বাড়িতে এই প্রজাতির পাখি রাখার চল রয়েছে। আমি অন্তত মন্ডপের শোভা বর্ধনের জন্য পাখি রাখায় আপত্তির কিছিু দেখছি না। ভারতীয় পশুপাখি সংরক্ষণের জন্য আইন রয়েছে, কিন্তু এগুলো তো বিদেশি প্রজাতির পাখি। তাদের জন্য কোনও নিয়মাবলী আছে বলে আমার জানা নেই।’ প্রতিবাদীদেরও একহাত নিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক। তাঁর মতে, ‘আজকাল সব কিছু নিয়েই প্রতিবাদ জানানোর চল হয়েছে। যাঁরা মন্ডপে পাখি রাখা নিয়ে হইচই করছেন, তাঁদের আগে মুরগির মাংস খাওয়া এবং শিকলে কুকুর বেঁধে রাখা বন্ধ করা উচিত।’
ডেপুটি কমিশনের নির্দেশের বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে পুজো কমিটির সম্পাদক শংকর রায় বলেন, মন্ডপে এমন ভাবে খাঁচাগুলি রাখা হয়েছে যে, সেগুলি পুজো না মিটলে সরানো অসম্ভব।
অসমের বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লাবৈদ্য উদ্যোক্তাদের বিনোদনের চেয়ে মানবিকতাকে প্রাধান্য দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। শুক্রবার মন্ডপ পরিদর্শনে গিয়ে পুজো কমিটির সদস্যদের এই বিষয়ে অনুরোধ জানান বন দফতরের আধিকারিকরাও। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির কোনও রদবদল ঘটেনি।